Uncategorized

২০২৪ সালে কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন । সম্পূর্ণ গাইডলাইন

২০২৪ সালে কি আপনি নিজের ব্যবসা শুরু করার জন্য উদগ্রীব কিন্তু কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না? ব্যবসা শুরু করা এবং তা সফল করার পথটি সহজ নয় - এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিশ্রম ও ধৈর্য্য। 

ব্যবসা শুরুর যাত্রাকে সহজ করতে, আমরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি তালিকাভুক্ত করেছি। এই আর্টিকেলে, আমরা আপনাকে একদম স্ক্র্যাচ থেকে ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়াটির মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাব এবং সফলতার জন্য মূল্যবান টিপস প্রদান করব। 

আসুন এগিয়ে যাওয়া যাক এবং জেনে নেই কিভাবে আপনি ২০২৪ সালে আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা শুরু করতে পারেন!

কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন

ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার যেসকল কাজগুলো নিষ্ঠার সাথে করা উচিত সেগুলোর মধ্যে সঠিক মার্কেট রিসার্চ ও কাস্টমার আনলাইসিস অন্যতম। সঠিক কাস্টমার আনলাইসিস - আপনাকে কাস্টমার কী চায় তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মার্কেট রিসার্চ শুধুমাত্র একটি গবেষণাই নয়, এটি আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে থাকে। আসুন এখন বিস্তারিত জেনে নেই, কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন এবং ব্যবসা শুরু করার সময় কোন বিষয়গুলোর উপর আপনার নজর রাখা উচিত।

১.১ Business Plan তৈরি করা

প্রথমত, ব্যবসায়িক পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি ব্যবসাকে কী ধরনের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে আমরা পূর্ব থেকেই ধারণা অর্জন করতে পারি। সুতরাং, আপনি যদি একজন পেশাদার উদ্যোক্তা হতে চান এবং আপনার ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে চান, তাহলে অবশ্যই একটি বিজনেস প্ল্যান তৈরি করতে হবে।

১.২ Product Sourcing করুন

Business plan নির্বাচন করার পর, আপনার প্রয়োজন product sourcing সম্পর্কে জানা। অতএব, সঠিকভাবে product sourcing করা ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং Product sourcing ঠিকমতো না করলে ব্যবসায় নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। একটি সোর্সিং এর উপর নির্ভর না হয়ে একাধিক সোর্সিং রাখা উচিত। যাতে করে বিপদে সমস‍্যা না হয়।

Product Sourcing কেন প্রয়োজন?

সঠিকভাবে product sourcing না করলে ব্যবসায় নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন: প্রোডাক্টের অভাব, উচ্চ দাম, নিম্নমানের প্রোডাক্ট।

Product Sourcing এর গুরুত্ব

  • গুণমান নিশ্চিত করা -  সঠিক সরবরাহকারী নির্বাচন করা পণ্যের গুণমান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
  • দাম কমানো - একাধিক সরবরাহকারীর সাথে তুলনা করা ব্যবসাগুলিকে সর্বোত্তম দামে পণ্য কিনতে সাহায্য করে।
  • প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা - বিশ্বস্ত সরবরাহকারীরা পণ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে, বিশেষ করে উচ্চ চাহিদার সময়ে।
  • ব্যবসায়িক ঝুঁকি কমানো - একাধিক সরবরাহকারীর সাথে কাজ করা ব্যবসায়িক ঝুঁকি কমায়, যেমন সরবরাহকারীর ব্যর্থতা বা দেরি।

কিভাবে Product Sourcing করবেন?

Product sourcing এর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

অনলাইন মার্কেটপ্লেস - Alibaba, GlobalSources ইত্যাদির মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেস সরবরাহকারীদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি সুবিধাজনক platform হতে পারে।

ট্রেড শো এবং প্রদর্শনী - ট্রেড শো এবং প্রদর্শনীগুলি সরবরাহকারীদের সাথে সরাসরি দেখা করার এবং তাদের প্রোডাক্টগুলি পরীক্ষা করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ করে দেয়।

সরাসরি যোগাযোগ - সরাসরি সরবরাহকারীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে যাদের পণ্যগুলি তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

এছাড়াও, লীন ম্যানেজমেন্ট - হল খরচ কমানো এবং সেইসাথে রাজস্ব বাড়ানো। এর কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে

এই সিস্টেম এর সুবিধা গুলো হলঃ

  • কম ক্যাশ ইনভেস্টমেন্ট
  • ক্যাশ অন্য জায়গায় ইনভেস্ট করে বাড়তি আয় করার সুযোগ

এই সিস্টেম এর অসুবিধা গুলো হলঃ

  • বেশি ক্রয় না করাতে, দাম একটু বেশি পরতে পারে
  • লাভের অংশ কমে যেতে পারে

বাল্ক ম্যানেজমেন্ট - আপনি বেশি করে কিনে, কম দামে বিক্রি করে, বেশি লাভ করতে পারেন। সাপ্লাইয়ার না থাকলেও, আপনি ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন।

যদিও এই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ও কিছু অসুবিধা রয়েছে - যেমন বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী, সব কিছুর দাম বেড়েই চলছে, কিন্তু বেচা-বিক্রি তেমন বাড়ছে না। তখন আপনার স্টককে ক্যাশ করতে সময় লেগে যেতে পারে।

তাই ব্যবসার উন্নতি করতে হলে, আপনাকে সার্বিক অবস্থা সব সময় বিবেচনা করে সিধান্ত নিতে হবে।

১.৩ সঠিক সেলস চ্যানেল নির্বাচন

Product sourcing এর পর জন্য প্রয়োজন ব্যবসার জন্য সঠিক সেলস চ্যানেল সিলেক্ট করা।

আপনি দোকান, নিজস্ব বিক্রয় প্রতিনিধি (SR), অনলাইন, অ্যাপ, ওয়েবসাইট, বা সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে সেল করতে পারেন।

এখন জেনে নেওয়া যাক - আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অনুযায়ী কোন সেলস চ্যানেলটি ব্যবহার করলে আপনি ভাল রেজাল্ট পাবেন।

যদি আপনি প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন চাল, ডাল ইত্যাদি বিক্রি করেন, তাহলে দোকানের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমেও দেশব্যাপী বিক্রি করতে পারেন।

১.৪ যথাযথ Market Research

আপনি যে সার্ভিস বা প্রোডাক্টের ব্যবসা শুরু করবেন, বাজারে সেটির চাহিদা আছে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন, সেজন্য দরকার market research।

প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নির্বাচন করার পরে আসে দাম নির্ধারণের পালা। তবে, দাম নির্ধারণ করার সময় বাজারের চাহিদা, প্রতিযোগিতা, উৎপাদন খরচ, প্রচার খরচ ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।

স্কিমিং প্রাইসিং - হল competitor থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি করা। এতে করে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয় এবং লাভ বেশি হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে দাম বেশি হওয়ার কারনে বিক্রি নাও হতে পারে। আপনাকে অবশ্যই মার্কেটের অবস্থা দেখে এটি apply করতে হবে।

পেনিট্রেশন প্রাইসিং - competitor থেকে একটু কম দামে বিক্রি করা। নতুন কোন পণ্য মার্কেট এ আসলে চাহিদা ও পরিস্থিতি বুঝে এটি আপনি অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতে আপনার বিক্রি বেশি ও কাস্টমারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে। 

কিন্তু এই সিস্টেমটি ব্যবহার করলে আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট হতে পারে, এছাড়াও কাস্টমাররা ভাবতে পারে দাম কম হওয়াতে প্রোডাক্ট এর মান খারাপ।

প্ল্যানিং, প্রোডাক্ট সোর্সিং, মার্কেট রিসার্চ, প্রাইসিং সেট করার পর ব্যবসা শুরু করুন। ব্যবসায় লাভ করতে চাইলে, আপনার সঠিকভাবে ব্যবসার সকল হিসাব রাখা প্রয়োজন। তা নাহলে দেখা যাবে, হিসাব এলোমেলো হয়ে - লাভের চেয়ে খরচ/ক্ষতি বেশি হয়ে যাচ্ছে। 

১.৫ প্রচার/Promotion

ব্যবসার জন্য promotion খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে promotion না করলে কেউ জানবে না যে আপনার ব্যবসা আছে। তাই প্রচারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে।

টেলিভিশনের পাশাপাশি বর্তমানে মোবাইল ফোন প্রচারের জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। ব্যবসার জন্য আপনি facebook business page setup করে,  facebook ads/boosting করে আপনার ব্যবসার প্রচার করতে পারেন খুব কম খরচে।

এছাড়াও, ব্যবসার জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করে, আপনি খুব সহজেই আপনার কাস্টমারের হাতের মুঠোতে আপনার ব্যবসা নিয়ে যেতে পারবেন। 

শেষ কিছু কথা

ব্যবসার শুরু করা সময়, প্রচেষ্টা এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতি সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। আশা করছি, পুরো আর্টিকেলটি পড়ার পর, কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন সেটি জেনে গিয়েছেন। তাহলে দেরি না করে, একটি সুন্দর business plan বানিয়ে শুরু করে দিন আপনার সফল উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।